তারাবির নামাজের দোয়া । তারাবির নামাজের দোয়া ও মোনাজাত আরবিতে
তারাবির নামাজের দোয়া ও মোনাজাত আরবিতে সহ সহজ বাংলা উচ্চারণ ও অর্থ। তারাবির নামাজের গুরুত্বপূর্ণ দোয়া ও বিশেষ মোনাজাত পড়ার নিয়ম জানতে ক্লিক করুন।
তারাবির নামাজের দোয়া । তারাবির নামাজের দোয়া ও মোনাজাত আরবিতে সহ সহজ বাংলা উচ্চারণ ও অর্থ। তারাবির নামাজের গুরুত্বপূর্ণ দোয়া ও বিশেষ মোনাজাত পড়ার নিয়ম জানতে ।
তারাবির নামাজ কী?
তারাবির নামাজ হল রমজান মাসের বিশেষ একটি নফল নামাজ, যা এশার নামাজের পর জামাতে পড়া হয়। এটি সুন্নতে মুয়াক্কাদা এবং মুসলিমদের জন্য অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ একটি ইবাদত।
তারাবির নামাজের ফজিলত
-
হাদিস অনুযায়ী, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন: "যে ব্যক্তি ঈমান ও সওয়াবের আশায় রমজানের তারাবির নামাজ আদায় করবে, তার পূর্ববর্তী সমস্ত গুনাহ ক্ষমা করা হবে" (বুখারি, মুসলিম)।
-
এটি আত্মশুদ্ধি, গুনাহ থেকে মুক্তি এবং জান্নাত লাভের মাধ্যম।
-
কিয়ামুল লাইল তথা রাতের ইবাদতের অংশ হিসেবে এটি বিশেষ ফজিলতপূর্ণ।
আরো পড়ুন ; মনের আশা পূরণের দোয়া । বড়লোক হওয়ার দোয়া
তারাবির নামাজের নিয়ত
তারাবির নামাজের নিয়ত আরবি: نَوَيْتُ أَنْ أُصَلِّيَ سُنَّةَ التَّرَاوِيحِ رَكْعَتَيْنِ خَالِصًا لِلَّهِ تَعَالَى
তারাবির নামাজের নিয়ত বাংলা উচ্চারণ: নাওয়াইতু আন উসাল্লিয়া সুন্নাতাত তারাওইহি রাকআতাইনি খালিসান লিল্লাহি তা'আলা।
তারাবির নামাজের নিয়ত অর্থ: আমি আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে তারাবির দুই রাকাত নামাজ পড়ার নিয়ত করলাম।
তারাবির নামাজের রাকাত সংখ্যা
তারাবির নামাজের রাকাত সংখ্যা নিয়ে বিভিন্ন মতামত রয়েছে, তবে মূলত দুইটি অভিমত পাওয়া যায়:
১. ২০ রাকাত (সর্বাধিক গ্রহণযোগ্য মতামত)
হাদিস ও সাহাবাদের আমল অনুযায়ী:
- রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর জীবদ্দশায় সাহাবারা তারাবির নামাজ আদায় করতেন, তবে তিনি পুরো রমজান মাস জামাতে পড়াননি।
- দ্বিতীয় খলিফা হযরত উমর (রা.) তার সময়ে সাহাবাদের সর্বসম্মতিতে ২০ রাকাত তারাবি জামাতে পড়ানোর ব্যবস্থা করেন (সুনানে বাইহাকি, ১/৪৯৬)।
- পরবর্তী খলিফারা এবং চার মাজহাবের ইমামগণ (ইমাম আবু হানিফা, ইমাম মালিক, ইমাম শাফিঈ, ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল) ২০ রাকাতকে গ্রহণ করেছেন।
✅ সর্বাধিক প্রচলিত পদ্ধতি:
- ২০ রাকাত (২ রাকাত করে ১০ সালাম)
- প্রতি চার রাকাত পর বিশেষ দোয়া (সুবহানা জিল মুলকি...)
- নামাজ শেষে বিতর ওয়াজিব
২. ৮ রাকাত (একটি সংক্ষিপ্ত মতামত)
কিছু মতবাদ অনুযায়ী, তারাবি ৮ রাকাতও হতে পারে। এর ভিত্তি মূলত হাদিস:
হাদিস:
"রাসুলুল্লাহ (সা.) রমজানের রাতগুলোতে আট রাকাত নামাজ পড়তেন, এরপর বিতর পড়তেন।" (সহিহ বুখারি, হাদিস: ২০১৩)
কিন্তু উল্লেখযোগ্য যে, এটি কিয়ামুল লাইল (তাহাজ্জুদ) নামাজ সম্পর্কিত হতে পারে এবং সাহাবারা সর্বসম্মতভাবে ২০ রাকাত পড়েছেন।
সংক্ষেপে:
- ৮ রাকাত পড়লে নামাজ হয়ে যাবে, তবে অধিক সওয়াবের জন্য ২০ রাকাত উত্তম।
- নবী (সা.)-এর আমল এবং সাহাবাদের সম্মতি অনুযায়ী ২০ রাকাত তারাবির নামাজ সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য।
৩. ৩৬ রাকাত (কিছু অঞ্চলের প্রচলন)
কিছু অঞ্চলে (বিশেষত মদীনার কিছু স্থানে) ৩৬ রাকাত তারাবি পড়ার প্রথা প্রচলিত ছিল, তবে এটি প্রচলিত নয়।
আরো পড়ুন ; রোজার ফজিলত সম্পর্কে হাদিস
তারাবির নামাজের দোয়া
তারাবির নামাজের পরে বিশেষ একটি দোয়া পড়া হয়, যা রাসুলুল্লাহ (সা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে।
তারাবির নামাজের দোয়া আরবি:
اللَّهُمَّ اجْعَلْنَا مِنَ التَّوَّابِينَ وَاجْعَلْنَا مِنَ الْمُتَطَهِّرِينَ، اللَّهُمَّ اهْدِنَا فِيْمَنْ هَدَيْتَ، وَعَافِنَا فِيْمَنْ عَافَيْتَ، وَتَوَلَّنَا فِيْمَنْ تَوَلَّيْتَ، وَبَارِكْ لَنَا فِيْمَا أَعْطَيْتَ، وَقِنَا شَرَّ مَا قَضَيْتَ، فَإِنَّكَ تَقْضِيْ وَلا يُقْضَى عَلَيْكَ، وَإِنَّهُ لا يَذِلُّ مَنْ وَالَيْتَ، وَلا يَعِزُّ مَنْ عَادَيْتَ، تَبَارَكْتَ رَبَّنَا وَتَعَالَيْتَ، فَلَكَ الْحَمْدُ عَلَى مَا قَضَيْتَ، نَسْتَغْفِرُكَ وَنَتُوْبُ إِلَيْكَ، وَصَلَّى اللَّهُ عَلَى سَيِّدِنَا مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِهِ وَصَحْبِهِ وَسَلَّمَ.
তারাবির নামাজের দোয়া বাংলা উচ্চারণ: আল্লাহুম্মাজ আলনা মিনাত তাওয়াবিনা ওয়াজ আলনা মিনাল মুতাতাহহিরীন, আল্লাহুম্মাহদিনা ফীমান হাদাইত, ওয়া আ'ফিনা ফীমান আফাইত, ওয়া তাওাল্লানা ফীমান তাওাল্লাইত, ওয়া বারিক লানা ফীমা আ'তাইত, ওয়া কিনা শাররামা কাদাইত, ফা-ইন্নাকা তাকদী ওয়ালা ইয়ুকদা আলাইকা, ওয়া ইন্নাহু লা ইয়াজিল্লু মَنْ ওয়ালাইত, ওয়ালা ইয়াআজ্জু মَنْ আদাইত, তাবারাক্তা রব্বানা ওয়া তা'আলাইত, ফালাকাল হামদু আলা মা কাদাইত, নাস্তাগফিরুকা ওয়ানাতুবু ইলাইক।
তারাবির নামাজের দোয়া বাংলা অনুবাদ: হে আল্লাহ! আমাদেরকে পরিশুদ্ধকারীদের অন্তর্ভুক্ত কর এবং আমাদেরকে তওবা কবুলকারীদের অন্তর্ভুক্ত কর। হে আল্লাহ! তুমি যাদের সঠিক পথে পরিচালিত করেছ, আমাদেরও তাদের অন্তর্ভুক্ত কর। যাদের তুমি নিরাপদে রেখেছ, আমাদেরও তাদের অন্তর্ভুক্ত কর।
তুমি যাদের বন্ধু করেছ, আমাদেরও তাদের সাথী কর। তুমি আমাদের যা দান করেছ, তাতে বরকত দাও। আমাদের সেই সকল বিপদ থেকে রক্ষা কর যা তুমি নির্ধারণ করেছ। কেননা, তুমি যা নির্ধারণ কর, তা কেউ প্রতিরোধ করতে পারে না। যে তোমার সাথী হয়, সে কখনো লাঞ্ছিত হয় না, এবং যার তুমি বিরোধিতা কর, সে কখনো সম্মানিত হতে পারে না।
তুমি মহিমান্বিত ও সর্বশক্তিমান। হে আমাদের প্রতিপালক! তোমার সমস্ত সিদ্ধান্তের জন্য আমরা তোমার প্রশংসা করি এবং তোমার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করি ও তোমার দিকেই ফিরে আসি।
আরো পড়ুন : রোজা ভঙ্গের কারণ সমূহ কি কি | মেয়েদের রোজা ভঙ্গের কারণ
তারাবির নামাজের মোনাজাত
তারাবির নামাজের পর সাধারণত দীর্ঘ মোনাজাত করা হয়। এতে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা, জান্নাতের দোয়া এবং উম্মাহর জন্য কল্যাণ কামনা করা হয়।
তারাবির নামাজের মোনাজাত আরবি: اللَّهُمَّ إِنَّا نَسْأَلُكَ رِضَاكَ وَالْجَنَّةَ، وَنَعُوذُ بِكَ مِنْ سَخَطِكَ وَالنَّارِ، اللَّهُمَّ اغْفِرْ لَنَا وَلِوَالِدِينَا وَلِجَمِيعِ الْمُسْلِمِينَ، اللَّهُمَّ اجْعَلْ حَيَاتَنَا طَاعَةً وَمَمَاتَنَا شَهَادَةً وَاجْعَلْنَا مِنَ الصَّالِحِينَ.
তারাবির নামাজের মোনাজাত বাংলা উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্না নাসআলুকা রিদ্বাকা ওয়াল জান্নাতা, ওয়া নাআউযুবিকা মিন সহাতিকা ওয়ান্নার, আল্লাহুম্মাগফির লানা ওয়ালি ওয়ালিদাইনা ওয়ালিজামি’ইল মুসলিমীন, আল্লাহুম্মাজআল হায়াতানা তা’আতান ওয়ামামাতানা শাহাদাতান ওয়াজআলনা মিনাস সালিহীন।
তারাবির নামাজের মোনাজাত বাংলা অনুবাদ: হে আল্লাহ! আমরা তোমার সন্তুষ্টি ও জান্নাত প্রার্থনা করি এবং তোমার অসন্তোষ ও জাহান্নাম থেকে আশ্রয় চাই। হে আল্লাহ! আমাদের, আমাদের পিতা-মাতা এবং সকল মুসলিমদের ক্ষমা করো। হে আল্লাহ! আমাদের জীবনকে তোমার আনুগত্যে পরিপূর্ণ করো, আমাদের মৃত্যুকে শাহাদাতের সাথে দাও এবং আমাদের সৎকর্মশীলদের অন্তর্ভুক্ত করো।
আরো পড়ুন : দোয়া কুনুত বাংলা অর্থসহ, আরবি, বাংলা উচ্চারণ, ফজিলত ও পড়ার নিয়ম
তারাবির নামাজের পর মোনাজাত
আরবি দোয়া:
اللهم اغفر لنا ذنوبنا، وكفّر عنا سيئاتنا، وتوفنا مع الأبرار، اللهم اجعلنا من المقبولين، اللهم تقبل منا صيامنا وقيامنا، واغفر لنا ولوالدينا ولجميع المسلمين، اللهم إنا نسألك الجنة ونعوذ بك من النار، اللهم بارك لنا في أعمارنا وأعمالنا، واغفر لنا ما تقدم من ذنوبنا وما تأخر، برحمتك يا أرحم الراحمين.
বাংলা উচ্চারণ:
"আল্লাহুম্মা গফির লানা জুনুবানা, ওয়া কাফফির আন্না সাইয়িআতিনা, ওয়া তাওয়াফ্ফানা মাআল আবরার।
আল্লাহুম্মাজ আলনা মিনাল মাকবুলীন।
আল্লাহুম্মা তাকাব্বাল মিন্না সিয়ামানা ওয়া কিয়ামানা।
ওয়াগফির লানা, ওয়া লিওয়ালিদাইনা, ওয়ালি জামি‘ইল মুসলিমিন।
আল্লাহুম্মা ইন্না নাসআলুকাল জান্নাতা ওয়া নাঊযুবিকা মিনান্নার।
আল্লাহুম্মা বারিক লানা ফি আ‘মারিনা ওয়া আ‘মালিনা।
ওয়াগফির লানা মা তাকাদ্দামা মিন জুনুবিনা ওয়া মা তা’আখখারা।
বিরাহমাতিকা ইয়া আরহামার রাহিমিন।"
বাংলা অর্থ:
"হে আল্লাহ! আমাদের পাপগুলো ক্ষমা করে দাও, আমাদের গুনাহ মাফ করে দাও এবং আমাদের সৎকর্মীদের সঙ্গে মৃত্যু দাও।
হে আল্লাহ! আমাদের কবুলযোগ্যদের অন্তর্ভুক্ত করো।
হে আল্লাহ! আমাদের রোজা ও নামাজ কবুল করো।
আমাদের, আমাদের পিতা-মাতা এবং সকল মুসলমানদের ক্ষমা করো।
হে আল্লাহ! আমরা তোমার কাছে জান্নাত প্রার্থনা করি এবং জাহান্নাম থেকে আশ্রয় চাই।
আমাদের জীবন ও কর্মে বরকত দাও।
আমাদের অতীত ও ভবিষ্যতের সমস্ত গুনাহ ক্ষমা করো।
হে সর্বশ্রেষ্ঠ দয়ালু, আমাদের প্রতি দয়া করো!"
তারাবির নামাজের মোনাজাত (বাংলা অর্থসহ)
তারাবির নামাজের পর মোনাজাত করা সুন্নত। সাধারণত মোনাজাতে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা, রহমত, দয়া, জান্নাতের প্রার্থনা এবং দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যাণ কামনা করা হয়।
আরবি দোয়া:
اللهم إنك عفو كريم تحب العفو فاعف عني
বাংলা উচ্চারণ:
"আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুউন্ করীম, তুহিব্বুল আফওয়া ফা'ফু আন্নি"
বাংলা অর্থ:
"হে আল্লাহ! নিশ্চয়ই তুমি ক্ষমাশীল, দয়ালু, তুমি ক্ষমা করতে ভালোবাসো, অতএব আমাকে ক্ষমা করে দাও।"
তারাবির নামাজের চার রাকাত পরপর দোয়া
সাধারণত চার রাকাত পরপর নিম্নলিখিত দোয়া পড়া হয়:
তারাবির নামাজের চার রাকাত পরপর দোয়া আরবি দোয়া:
سُبْحَانَ ذِي الْمُلْكِ وَالْمَلَكُوتِ، سُبْحَانَ ذِي الْعِزَّةِ وَالْعَظَمَةِ وَالْهَيْبَةِ وَالْقُدْرَةِ وَالْكِبْرِيَاءِ وَالْجَبَرُوتِ، سُبْحَانَ الْمَلِكِ الْحَيِّ الَّذِي لَا يَنَامُ وَلَا يَمُوتُ، سُبُّوحٌ قُدُّوسٌ رَبُّنَا وَرَبُّ الْمَلَائِكَةِ وَالرُّوحِ، لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ نَسْتَغْفِرُ اللهَ نَسْأَلُكَ الْجَنَّةَ وَنَعُوذُ بِكَ مِنَ النَّارِ
তারাবির নামাজের চার রাকাত পরপর দোয়া বাংলা উচ্চারণ:
"সুবহানা জিল মুলকি ওয়াল মালাকূত, সুবহানা জিল ইজ্জতি ওয়াল আজমাতি ওয়াল হাইবাতি ওয়াল কুদরাতি ওয়াল কিবরিয়াই ওয়াল জাবরূত, সুবহানাল মালিকিল হাইয়্যিল্লাযী লা ইয়ানামু ওয়ালা ইয়ামুত, সুব্বুহুন কুদ্দুসুন রব্বুনা ওয়া রাব্বুল মালাইকতি ওয়ার রুহ, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু নাস্তাগফিরুল্লাহ, নাসআলুকাল জান্নাতা, ওয়া নাঊযুবিকা মিনান্নার।"
তারাবির নামাজের চার রাকাত পরপর দোয়া বাংলা অর্থ:
"মহান সেই রাজাধিরাজ, যিনি সকল সৃষ্টির অধিপতি। মহিমাময় সেই শক্তিধর, যিনি সম্মান, মর্যাদা, ভয়, শক্তি, গরিমা ও ক্ষমতার অধিকারী। মহান সেই চিরঞ্জীব রাজাধিরাজ, যিনি ঘুমান না এবং মৃত্যুবরণ করেন না। তিনি সর্বশুদ্ধ, পবিত্র, আমাদের প্রতিপালক এবং ফেরেশতাদের ও জিবরাঈল (আ.)-এরও প্রতিপালক। আল্লাহ ছাড়া কোনো সত্য ইলাহ নেই। আমরা আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই, জান্নাত প্রার্থনা করি এবং জাহান্নাম থেকে আশ্রয় চাই।"
তারাবির নামাজের দোয়া না পড়লে কি হয়?
তারাবির নামাজের দোয়া পড়া সুন্নত। এটি না পড়লে নামাজ হয় তবে সওয়াব থেকে বঞ্চিত হতে পারেন।
✅ দোয়াটি পড়া সুন্নত, ফরজ নয়—না পড়লেও নামাজ শুদ্ধ হবে।
✅ দোয়াটি মূলত আল্লাহর গুণগান, যা পড়লে সওয়াব বৃদ্ধি পায়।
✅ দোয়া না পড়লে কোনো গুনাহ নেই, তবে এটি একটি বরকতময় আমল, তাই পড়া উত্তম।
তারাবি নামাজের দোয়া সুবহানা জিল মুলকি
সুবহানা জিল মুলকি ওয়াল মালাকূত, সুবহানা জিল ইজ্জতি ওয়াল আজমাতি ওয়াল হাইবাতি ওয়াল কুদরাতি ওয়াল কিবরিয়াই ওয়াল জাবরূত,
সুবহানাল মালিকিল হাইয়্যিল্লাযী লা ইয়ানামু ওয়ালা ইয়ামুত, সুব্বুহুন কুদ্দুসুন রব্বুনা ওয়া রাব্বুল মালাইকতি ওয়ার রুহ,
লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু নাস্তাগফিরুল্লাহ, নাসআলুকাল জান্নাতা, ওয়া নাঊযুবিকা মিনান্নার।
তারাবির নামাজের নিয়ম
- নিয়ত: "নাওয়াইতু উসাল্লি সুন্নাতাত তারাবিহি রাক’আতাইনি (ইমামা / মাআল ইমামি) লিল্লাহি তাআলা।"
- প্রতি দুই রাকাত পর সালাম ফিরিয়ে ২০ রাকাত পূর্ণ করা সুন্নত।
- প্রতি চার রাকাত পর "সুবহানা জিল মুলকি" দোয়া পড়া হয়।
- তারাবির নামাজ জামাতে পড়া উত্তম, তবে একা পড়লেও বৈধ।
- নামাজ শেষে বিতর নামাজ পড়তে হয়।
তারাবির নামাজের দোয়া কতবার পড়তে হয়?
চার রাকাত পর একবার "সুবহানা জিল মুলকি" দোয়া পড়া সুন্নত।
তারাবির নামাজের নিয়ম কানুন মহিলাদের
- মহিলারা বাড়িতে পড়তে পারবেন।
- ২০ রাকাত পড়া সুন্নত, তবে ৮ রাকাতও পড়া যায়।
- তারাবির পর বিতর নামাজ পড়তে হয়।
- মহিলাদের জন্য জামাতে পড়া আবশ্যক নয়, একা পড়লেই হবে।
তারাবির নামাজ কি সুন্নত না নফল
তারাবির নামাজ সুন্নতে মুআক্কাদা (প্রত্যেক মুসলমানের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত)।
✅ সুন্নতে মুআক্কাদা অর্থ:
এটি এমন একটি সুন্নত যা রাসুলুল্লাহ (সা.) নিয়মিত আদায় করেছেন এবং সাহাবারা (রা.) তা মান্য করেছেন। এটি না পড়লে গুনাহ হবে না, তবে নিয়মিত না পড়লে কঠোর তিরস্কারের সম্মুখীন হতে হতে পারেন।
প্রমাণ ও হাদিসের ভিত্তি
???? হাদিস:
"রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি ঈমান ও সওয়াবের আশায় রমজানের রাতগুলোতে কিয়াম (তারাবি) করে, তার অতীতের সব গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়।" (সহিহ বুখারি: ৩৭, সহিহ মুসলিম: ৭৫৯)
???? সাহাবাদের আমল:
- হযরত উমর (রা.) তার খিলাফতের সময় সাহাবাদের পরামর্শক্রমে ২০ রাকাত তারাবির নামাজ জামাতে পড়ার ব্যবস্থা করেন। (সুনানে বাইহাকি: ১/৪৯৬)
- ইমাম মালিক, ইমাম আবু হানিফা, ইমাম শাফিঈ ও ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল (রহ.)-সহ চার মাজহাবের অনুসারীরা তারাবিকে সুন্নতে মুআক্কাদা বলে মত দিয়েছেন।
তারাবি নফল হলে কী হতো?
- নফল ইবাদত ঐচ্ছিক, তবে তারাবি রাসুল (সা.)-এর গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত।
- সাহাবাদের সময় থেকে এটি জামাতে পড়ে আসা হয়েছে, যা সাধারণ নফল নামাজের ক্ষেত্রে হয় না।
✅ সিদ্ধান্ত:
তারাবির নামাজ নফল নয়, বরং সুন্নতে মুআক্কাদা। এটি পড়া সুন্নত এবং অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ।
FAQ তারাবির নামাজ
১. তারাবির নামাজ কত রাকাত?
সাধারণত ২০ রাকাত পড়া হয়, তবে অনেকে ৮ রাকাতও পড়েন।
২. তারাবির নামাজের গুরুত্ব কী?
রমজান মাসে এটি পড়লে পূর্বের সমস্ত গুনাহ মাফ হয়ে যায়।
৩. তারাবির নামাজ কি একা পড়া যাবে?
হ্যাঁ, তবে জামাতে পড়ার অধিক সওয়াব রয়েছে।
৪. তারাবির নামাজ কি ফরজ?
না, এটি সুন্নতে মুয়াক্কাদা।
উপসংহার
তারাবির নামাজ মুসলিমদের জন্য বিশেষ ফজিলতপূর্ণ ইবাদত। এটি পড়লে গুনাহ মাফ হয় এবং জান্নাত লাভের সুযোগ তৈরি হয়। সঠিকভাবে দোয়া ও মোনাজাত পড়ার মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য লাভ করা সম্ভব।